ম্যানপাওয়ার সাপ্লাই বিজনেস (জনশক্তি সরবরাহ ব্যবসা) হালাল

ম্যানপাওয়ার সাপ্লাই বিজনেস

ম্যান পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবসা হলো, এমন একটি ব্যবসা যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী কর্মী বা শ্রমিক সরবরাহ করা হয়। এটি মূলত একটি হিউম্যান রিসোর্স (HR) ও (লেবার সাপ্লাই) ভিত্তিক ব্যবসা, যেখানে কোম্পানিগুলো তাদের প্রয়োজনীয় কর্মী পেতে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়।

এই ব্যবসায় ম্যানপাওয়ার সাপ্লায়ার বা জনশক্তি সরবরাহকারী ব্যক্তি বা সংস্থা বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে এই মর্মে চুক্তি করে যে, সে তাদেরকে মাসিক, দৈনিক বা ঘণ্টা প্রতি এত টাকা হারে শ্রমিক দিবে। অতঃপর সে শ্রমিকের সাথে তার থেকে কম মূল্যে চুক্তি করে। অতঃপর চুক্তি মোতাবেক সে কোম্পানির নিকট শ্রমিক সরবরাহ করে। তিনি যেহেতু হাজিরা লোকদের পিছনে পরিশ্রম করেন, তাদেরকে কাজ বুঝানো, পরিচালনা ইত্যাদি করেন সেহেতু তার এই কমিশন নেওয়াটা হালাল।

ম্যানপাওয়ার সাপ্লাই বিজনেস (জনশক্তি সরবরাহ ব্যবসা ) হালাল

ইসলামের দৃষ্টিতে এ ব্যবসায় কোনও সমস্যা নাই। অর্থাৎ এ ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হালাল। কারণ তা কোম্পানি বা প্রকল্পের কাজের জন্য শ্রমিক সংগ্রহ করা, প্রয়োজন পথে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, কোম্পানি এবং শ্রমিকদের মাঝে মধ্যস্থতা করা, শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা, তাদেরকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া ও পরিচালনা ইত্যাদি পরিশ্রমের বিনিময়ে উপার্জন। তবে এ ক্ষেত্রে কতিপয় শর্ত এবং বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এগুলো যথাযথভাবে পূরণ করা হলে তা হালাল; অন্যথায় তা হারামে পরিণত হবে।

নিচে এ মর্মে দশটি শর্ত উল্লেখ করা হলো:

১. ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল এবং সরকারি আইনে বৈধ হওয়া। (যেমন— নির্মাণ, কৃষি, শিল্প ইত্যাদি) সুতরাং কোনো হারাম বা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ বা আইন বহির্ভূত ভাবে কোন কাজ (দেহব্যবসা, মদ তৈরি বা পরিবেশন, সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, সরকারের অনুমোদন বিহীন ব্যবসা ইত্যাদি)-এর জন্য শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া, কোম্পানি ও শ্রমিকদের মাঝে মধ্যস্ততা করা এবং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা ইত্যাদি সবই হারাম।

২. শ্রমিক, সরবরাহকারী, এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত চুক্তি থাকা।কাজ শুরু করার পূর্বে শ্রমিককে তার কাজের ধরণ ও প্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানানো।কর্মঘন্টা তথা কাজের সময়-সীমা (প্রতিদিন কত ঘণ্টা এবং শুরু ও শেষ সময়) নির্ধারণ করা।শ্রমিকদের ওভার টাইম, ছুটির দিন, কাজের মধ্যে খাবার, সালাত, বিশ্রাম ইত্যাদির জন্য বিরতি, ইত্যাদি বিষয়গুলো স্পষ্ট করা।স্যালারি বা পারিশ্রমিকের পরিমাণ নির্ধারণ করা ইত্যাদি।

৩. শ্রমিকদের সাথে চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনও চুক্তি লঙ্ঘন করা যাবে না। ইসলামের চুক্তি রক্ষা করার ব্যাপারে অপরিসীম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এখনো চুক্তির লঙ্ঘনকে মারাত্মক অপরাধ ও গুনাহ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে শ্রমিকের সাথে কথা বলে বা তার সম্মতিক্রমে চুক্তির বিশেষ কোনো ধারা পরিবর্তন বা সংশোধন করা যেতে পারে।

৪. উল্লেখিত চুক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন ধরনের টালবাহানা বা ছল-চাতুরি ব্যাতিরেকে শ্রমিকের নিকট তার পারিশ্রমিক/বেতন পরিশোধ করতে হবে। কোম্পানি থেকে স্যালারি আসেনি বা প্রকল্প‌ থেকে লাভ হয়নি বা ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে এসব বলে সরবরাহকারী শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে বিলম্ব বা গড়িমসি করতে পারবে না। কোম্পানি থেকে স্যালারি পেতে দেরি হলে কিংবা কোম্পানি টাকা না দিলে অথবা কন্টাকটার বা শ্রমিক সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে চুক্তি মোতাবেক সে তার নিজস্ব পূঁজি থেকে বেতন পরিশোধ করবে। কারণ সে শ্রমিকের সাথে নির্দিষ্ট সময়ে বেতন সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ। শ্রমিকের সম্মতি ব্যতিরেকে সে তাকে এক পয়সাও কম দেওয়ার অধিকার রাখে না।

৫. শ্রমিকদের সাথে মিথ্যা কথা বলা,‌ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া ও ধোঁকাবাজি করা হারাম। যেমন: নির্ধারিত কাজের কথা বলে নিয়োগ দেওয়ার পরে অন্য কাজ করতে বাধ্য করা, নির্দিষ্ট বেতন থেকে কম দেওয়া, কাজ শেষে বোনাস দেওয়ার কথা বলে না দেওয়া ইত্যাদি।

৬. টাইম শীট ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। উদাহরণ: শ্রমিকের নিকট তার কাজের টাইম শীট কম টাকায় ক্রয় করে পরবর্তীতে কোম্পানি থেকে এর মাধ্যমে বেশি টাকা উত্তোলন করা। এটা সুদের অন্তর্ভুক্ত।

৭. শ্রমিকদের ইচ্ছার বাইরে জোরজবরদস্তি মূলক কাজে নিয়োগ দেওয়া বা সাধ্যাতীত কোনো কাজে বাধ্য করা জায়েজ নয়। কেননা তা জুলুম। আর ইসলামে জুলুম করা কবিরা গুনাহ।অনুরূপভাবে যদি কাউকে বাধ্য করা হয় এমন চুক্তিতে যেখানে তারা স্বাধীনভাবে কাজ ছাড়তে পারে না তাহলে তা ইসলামি আইনে যেমন হারাম তেমনি দেশের আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ।

৮. শ্রমিকদেরকে তাদের প্রাপ্য দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে গড়িমশি করা বা বিলম্ব করা হারাম‌‌।

৯. ঘুষ, দুর্নীতি অথবা রাজনৈতিক বা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কাজ ধরা। এটা অন্যায় এবং হারাম।

১০. কোম্পানি বা প্রকল্প পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত শ্রমিকের রিকোয়ারমেন্ট” (Requirement) তথা আবশ্যকীয় শর্ত ও যোগ্যতা পূরণের ক্ষেত্রে শ্রমিকের কাজের অনুমোদন পত্র, পরিচয় পত্র, সনদপত্র, সরকারি বিভিন্ন ডকুমেন্ট ইত্যাদিতে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া অথবা তাদেরকে এক্ষেত্রে সাহায্য করা হারাম। মোটকথা, যদি ন্যায়সঙ্গত ও নৈতিকভাবে পরিচালিত হয়, তবে ‘ম্যান পাওয়ার সাপ্লাই’ ব্যবসা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ। কিন্তু যদি এতে অন্যায়, প্রতারণা, জুলুম বা হারাম উপার্জন জড়িত থাকে তবে এটি হারাম হবে।

সেক্ষেত্রে  https://www.facebook.com/jadreaminternational আমরা দিচ্ছি ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ১০০% বৈধ উপায় এ দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নিয়োগ। সেনজেন ,ননসেনজেন ও মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলোর ওয়ার্ক ভিসা, বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের অফিস ভিজিট করুন অথবা কল করুন স্ক্রিনে দেয়া নম্বরে,,

আমাদের ঠিকানা: JA DREAM INTERNATIONAL Confidents Tower ,Building no-2.Lift 12/A Shajadpur, Gulshan, Dhaka-1212 Mobile no: 01804212651 01883817005

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More Articles & Posts